Top NewsKharagpur: দখলমুক্ত করতে ডান-বাম সব দলীয় কার্যালয় সরাতে নোটিস রেলের

Kharagpur: দখলমুক্ত করতে ডান-বাম সব দলীয় কার্যালয় সরাতে নোটিস রেলের

খড়গপুর: দিন কয়েক আগেই রেলশহর খড়গপুরের সাউথ সাইড এলাকায় দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের তরফে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাংলোর দেওয়ালে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। নোটিস দিয়ে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, অবিলম্বে বাংলোটি খালি করে দিতে। বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ রেলের একটি বাংলো অবৈধভাবে দখল করে রাখা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। ৬৭৭ নম্বর এই বাংলোর অধিকারী ছিলেন বিজেপি নেতা তুষারকান্তি ঘোষ। সেই বাংলো ব্যবহারের মেয়াদ ২০২০ সালের ৩১ মার্চ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও সেই বাংলো ব্যবহার করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে। পরে অবশ্য দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে তুষারকান্তি ঘোষকে শোকজ করা হয়। ইতিমধ্যে ২১ এপ্রিল তাঁকে সশরীরে রেলের খড়গপুর ডিভিশনের এস্টেট অফিসারের কাছে হাজির হতে বলা হয়েছে। এই আবহে এবার বিতর্ক শুরু হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জারি করা একটি নোটিসকে কেন্দ্র করে। রেলের পক্ষ থেকে এই নোটিস জারি করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রেলশহর খড়গপুরে রেলের জায়গায় গড়ে ওঠা সব রাজনৈতিক দলের কার্যালয় সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই নোটিসের একটি করে কপি সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলের হিসাব অনুযায়ী, খড়গপুর শহরে রেলের জায়গায় অবৈধভাবে দখল করে রাখা তৃণমূলের কার্যালয় রয়েছে ২১টি, বিজেপির ১২টি, কংগ্রেসের ২টি ও সিপিএমের একটি। আর রেলের এই নোটিসকে কেন্দ্র করে এখন রেলশহর খড়গপুরের এই চারটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, দিলীপ ঘোষের অবৈধভাবে বাংলো দখল করে ব্যবহার করার বিষয়টি সামনে চলে আসার পরই রেল এবার প্রতিহিংসার রাস্তা বেছে নিয়েছে। আর বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রেলের উচিত ছিল দিলীপ ঘোষকে বাংলো ছেড়ে দেওয়ার নোটিস দেওয়ার সময় সমস্ত অবৈধভাবে দখল করে রাখা রাজনৈতিক দলের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা। যদিও এই ব্যাপারে রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সবটাই নিয়ম ও আইন মেনে করা হয়েছে। এই ব্যাপারে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “রেল এখন প্রতিহিংসার রাস্তা বেছে নিয়েছে। দিলীপ ঘোষের অবৈধভাবে বাংলো দখল করে ব্যবহার করার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। আমরাই সেটি প্রকাশ্যে এনেছি। এখন রেল প্রতিহিংসার রাস্তা বেছে নিয়ে আমাদের দলীয় কার্যালয়গুলি সরিয়ে ফেলার
চক্রান্ত করেছে। আমাদের সাফ বক্তব্য রেলের উচিত ছিল এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনা করা।”
অপরদিকে, বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, “রেলের উচিত ছিল আগে এই নোটিস দেওয়া। উচিত ছিল দিলীপ ঘোষকে যখন বাংলো ছেড়ে
দেওয়ার নোটিস লাগানো হয়েছিল, তখনই বাকি অবৈধভাবে নির্মিত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার নোটিস জারি করা।
কিন্তু রেল তখন এই কাজটি করেনি। আমাদের সাফ বক্তব্য আগে তৃণমূল-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হোক। তারপর আমরা করব।” এদিকে, খড়গপুরের পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, “রেল ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা করি। তারপর বলব।” পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পারমিতা ঘোষ বলেন, “রেলের এই নোটিসের কোনও মূল্য নেই। কারণ, রেল এলাকা এখন পুরসভার অন্তর্গত। রেল এলাকার আটজন কাউন্সিলরের বসার জন্য ও সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে একটি করে কার্যালয় তো দরকার। সেগুলি যদি এখন সরিয়ে নিতে হয়, তাহলে রেল এলাকার ওয়ার্ডগুলির সাধারণ মানুষ পরিষেবা নেওয়ার জন্য কোথায় যাবেন?” আর রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম তথা জনসংযোগ আধিকারিক নিশান্ত কুমার জানিয়েছেন, “সবটাই নিয়ম ও আইন মেনে করা হয়েছে। রেলের নোটিসে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রেলের জায়গায় অবৈধভাবে দখল করে রাখা কার্যালয়গুলি সরিয়ে নেওয়া না হলে রেলের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”