Top Newsমশারির দড়ি গলায় জড়িয়ে মৃত্যু দুই বছরের শিশুর

মশারির দড়ি গলায় জড়িয়ে মৃত্যু দুই বছরের শিশুর

বহরমপুর: মশার কামড় থেকে রক্ষা করতে কোলের একরত্তিকে মশারির মধ্যে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলেন মা। কিন্তু সেই মশারির দড়ি গলায় জড়িয়ে মৃত্যু হল দুই বছরের শিশুর! মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার মহেশপুর এলাকায়। কোলের শিশু উসমান শেখকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা-বাবা। জানা গিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুর বেলায় উসমানকে মশারির মধ্যে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে পাশের ঘরে কাজ করছিলেন মা গুলশানা বানু। মায়ের অনুপস্থিতিতে বিছানায় হামাগুড়ি দিতে দিতে কখন যে সেই মশারির দড়ি গলায় জড়িয়ে যায় শিশুটির সেটা কেউই বুঝতে পারেননি। কাজ শেষে ঘরে ঢুকতেই গুলশানা বানু দেখেন তার ছেলে ছটফট করছে। দ্রুত ওই শিশুকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওই শিশুকে আইসিইউ ওয়ার্ডে রাখা হয়। মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় উসমানের। শোকার্ত মৃত শিশুর বাবা সাদিকুল শেখ বলেন, “ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলাম না। এভাবে যে একমাত্র সন্তানকে হারাতে হবে সেটা কেউই বুঝতে পারিনি।” অসাবধানতাবশত কোলের শিশুকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান মা গুলশানা বানু। মাঝে মাঝে জ্ঞান হারাচ্ছেন। তাঁকে শান্ত করতে চেষ্টা করছেন পরিবারের লোকজন। ওই শিশুর মৃত্যুতে শোকাহত এলাকার বাসিন্দারাও। বুধবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ওই শিশুর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এদিকে এই মৃত্যুর ঘটনায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সুপার অনাদি রায়চৌধুরী বলেন, “ওই শিশুর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। গলায় আঘাত গুরুতর ছিল। পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক দেখে আইসিইউ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি শিশুটিকে।” হরিহরপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অসাবধানতাবশতই ওই ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ কিছু নেই তবুও তদন্ত করা হচ্ছে। হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মীর আলমগীর মৃত শিশুর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, সচেতনতা বাড়াতে জোর দেন। তিনি বলেন, “শিশুদের নাগালের মধ্যে বিপদজনক কিছু রাখা উচিত নয়। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে দড়ি, কাঁচি, রান্নার বঁটি বাড়ির মধ্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। অভিভাবকদের সব সময় সচেতন থাকা দরকার।”