Top NewsKGP: খড়গপুর রেল ওয়ার্কশপে দুর্ঘটনায় কর্মীর মৃত্যুর তদন্ত দাবি পরিবারের

KGP: খড়গপুর রেল ওয়ার্কশপে দুর্ঘটনায় কর্মীর মৃত্যুর তদন্ত দাবি পরিবারের

খড়গপুর: অবিভক্ত দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের কর্মচারী সমবায় ব্যাঙ্কের ডেপুটি চিফ ম্যানেজার ইয়েরা সাস্থা স্বরূপের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার এখনও কোনও কিনারা করতে পারে নি খড়গপুর। আর এই জায়গাতেই ঘটনার সঠিক তদন্ত করার সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে খড়গপুর জিআরপির বিরুদ্ধে। এখন দাবি উঠেছে ঘটনার তদন্ত কেন্দ্রের কোনও তদন্তকারী এজেন্সিকে দিয়ে করানো হোক। আর এই দাবিতে সরব হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে মজদুর ইউনিয়ন। তবে শুধু এই রেল কর্মচারী সংগঠন নয়। খড়গপুর জিআরপির ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মৃত ব্যাঙ্ক আধিকারিকের অন্যান্য সহকর্মীরা। প্রত্যেকেই জানতে চাইছেন ঘটনার পেছনে আসল রহস্য কি। তাঁদেরও অভিযোগ এই ঘটনার তদন্তে খড়গপুর জিআরপির ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। যদিও এই ব্যাপারে জানার জন্য বারবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেন নি খড়গপুর জিআরপির আইসি। তবে জানা গিয়েছে এই ঘটনার তদন্ত জিআরপি আদৌ শুরু করে নি। অথচ জিআরপির কাছেও একই প্রশ্ন কলকাতার গার্ডেনরীচ থেকে এত দূরে খড়গপুরে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের আধিকারিকের রেললাইনের উপর দ্বি খন্ডিত মৃতদেহ কেন পাওয়া যাবে। এই ব্যাপারে মৃত সমবায় ব্যাঙ্কের আধিকারিকের সহকর্মী কৃষ্ণেন্দু পাল বললেন ” জানি না কেন খড়গপুর জিআরপি এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে আর বাকি দশটা অস্বাভাবিক ঘটনার মত ট্রিট করছে। আমরা সকলেই চাই রহস্যের উন্মোচন।” প্রসঙ্গত শুক্রবার রাতে খড়গপুর মেদিনীপুর রেলশাখার গিরি ময়দান ও গোকুলপুর স্টেশনের মাঝে খড়গপুর শহরের খরিদা রেলগেট থেকে একটু দূরে এই ব্যাঙ্ক আধিকারিকের দ্বি খন্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। শনিবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের লোকজন তাঁর মৃতদেহ নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের বিশাখাপত্তনম জেলার পেনডুরথি থানার কৃষ্ণনগর এলাকায় বাড়িতে নিয়ে চলে গিয়েছেন। তবে তাঁর স্ত্রী লিখিতা লাবণ্য স্বামীর এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে সন্দেহজনক বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয় নি। কিন্তু খড়গপুর জিআরপি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে আপাতত দায় সেরেছে। এমনটাই অভিযোগ। এমনকি জিআরপি মৃতের দুটি মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে বাইকের চাবি সহ পরিচিত পত্র ও হাতঘড়িটা নিজেদের হেফাজতে রেখেছে। এতকিছুর পরেও খড়গপুর জিআরপি কেন হাত পা গুটিয়ে বসে রয়েছে সেই নিয়ে নতুন রহস্য তৈরি হয়েছে। এছাড়া ঘটনার পর চারদিন কেটে গেলেও এখনও মৃত আধিকারিকের মোটরবাইকের হদিস পাওয়া না যাওয়ায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। আর এই জায়গাতেই ঘটনার তদন্তে কেন্দ্রের কোনও তদন্তকারী এজেন্সিকে দিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। কারন গোটা ঘটনার পেছনে সমবায় ব্যাঙ্কের বিরাট আর্থিক কেলেঙ্কারি লুকিয়ে থাকতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এই ব্যাপারে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে মজদুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব রেল জোনের সাধারন সম্পাদক শুভাশিস বাগচি বললেন ” গোটা ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত।” তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন ” সমবায় ব্যাঙ্কের ওই আধিকারিক থাকতেন কলকাতার চেতলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে। কাজ করতেন গার্ডেনরীচে। আর খড়গপুরের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। তাহলে এত দূরে রেললাইনের উপর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হল কি করে। আর এই ঘটনার তদন্তে খড়গপুর জিআরপিই বা কেন চুপ করে বসে রয়েছে? কেন কিছু করছে না?” তিনি জানালেন গত ২০১০ সালের পর থেকে সমবায় ব্যাঙ্কের কোনও নির্বাচন হয় নি। নিয়োগ থেকে শুরু করে পদোন্নতি সহ ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে বহু অনিয়ম হয়েছে। আর বিষয়টি এমন নয় রেলের আধিকারিকরা কিছু জানেন না। সকলেই সবকিছু জানেন। আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই বছর খানেক আগে এই ব্যাঙ্কের ডেপুটি চিফ ম্যানেজার হিসাবে যোগদান করা ওই আধিকারিকের এইরকম রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা। তিনি বললেন ” প্রশ্ন তো উঠবেই। আর এই রহস্যের উন্মোচন আমরা চাই। তারজন্য খড়গপুর জিআরপি না পারলে কোনও কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সিকে আনা হোক।” এদিকে মৃত ব্যাঙ্কের সহকর্মীরা উদ্যোগ নিচ্ছেন মৃতের পরিবারকে নিয়ে এসে খড়গপুর জিআরপিতে একটি অভিযোগ দায়ের করাতে। কারন মৃতের সহকর্মীরা সহ রেলকর্মীরা এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার আসল সত্যটি জানতে আগ্ৰহী।