নিজস্ব সংবাদদাতা: পিএফ ফান্ডের টাকা প্রতারণার অভিযোগে ও ভুয়া ডিরেক্টর সাজিয়ে আদালতে পাঠানোর ঘটনায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সূর্যপ্রকাশ কেশরওয়ানি এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে, শুক্রবার ওই দুই সংস্থার আবেদন খারিজ করে আদালত জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে ইডি ও এসএফআইও। এই অবস্থায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপের কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছে না আদালত। প্রসঙ্গত, দুটি বেসরকারি সংস্থার গরিব শ্রমিকদের পিএফ-এর টাকা প্রতারণার অভিযোগে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) ও সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও)-এর আধিকারিকদের তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই তদন্তের সাপেক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ ছিল আদালতে। এদিন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এদিন আদালতে রিপোর্ট পেশ করে আইএসএফও। তাদের আইনজীবী সৌমিক নন্দীর অভিযোগ, “এদিন দুপুর ২টোয় আমরা হেয়ার স্ট্রিট থানায় গেয়েছিলাম। অভিযোগপত্র দিয়েছি। কিন্তু এফআইআর রুজুর পরিবর্তে থানা থেকে বলা হয়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশনামার কপি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির পরে এফআইআর দায়েরের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তার প্রেক্ষিতে এদিন সময় বেঁধে দিয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে হাজির হয়ে এর কারণ দর্শাতে হবে। কিন্তু আদালতের এই নির্দেশের কিছু সময় পর আইনজীবীরা জানান, এফআইআর রুজু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আগের নির্দেশ মতো এদিন হাজির হন হেয়ার স্ট্রিট থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুমিত দাশগুপ্ত। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “একটু শক্ত হাতে কাজ করুন। এক্ষেত্রে আপনারা খুব ভালো কাজ করেছেন। আপনাদের কাজে আমি খুব খুশি।” তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি আরও বলেন, “আমরা সবাই দরিদ্র মানুষ। জানেন তো, সবার তো আর ১০ তলা বাড়ি নেই। ডিরেক্টর মাটির বাড়িতে থাকেন। তাঁর কাছে কোম্পানির সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই। মামলাকারীদের ২১ কোটি টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ড বকেয়া।” এর পরই পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করে আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, “আমি লক্ষ করেছি যেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তি যুক্ত থাকেন না সেখানে ৩ দিনের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তি যুক্ত থাকলে অনেক বেশি দিন সময় লাগে। আমি ব্যক্তিগতভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না। পুলিশের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। আপনাদের কাজ না করতে দিলে আপনারা আর কী করবেন? আপনাদের নির্বিঘ্নে কাজ করতে দিলে সাধারণ আইন-শৃঙ্খলার কোনও সমস্যাই থাকে না।” উল্লেখ্য, ডেল্টা লিমিটেড এবং ওলিশা রিয়ালিটি প্রাইভেট লিমিটেড-এই দুই সংস্থার কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকপ্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা না পেয়ে মামলা দায়ের করেন হাই কোর্টে। দাবি, প্রায় ২১ কোটি টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রতারণা হয়েছে। সেই মামলাতেই সংস্থার ডিরেক্টরদের হাজিরার নির্দেশ দেয় আদালত।