নিজস্ব সংবাদদাতা: এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করল বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার পুলিশ। সোনামুখী থানার দেরিয়াপুর গ্রামে ধৃত জীবন ঘোষের (৪৫) বাড়ি। বুধবার নির্যাতিতা যুবতীর দাদা থানায় জীবনের বিরুদ্ধে তাঁর বোনকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের জেরে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কার্যত জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার রাতেই পুলিশ অভিযুক্তকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নির্যাতিতা ওই যুবতী বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি। সোনামুখী থানার আইসি সূর্যদীপ্ত ভট্টাচার্যর কথায়, “প্রায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবারের তরফে বুধবার অভিযোগ জানানো হয়। তারই ভিত্তিতে দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বিষ্ণুপুরে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনামুখী থানা এলাকার বছর আঠারোর ওই যুবতী অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের। একেবারে দিন আনা দিন খাওয়া ওই পরিবারের মেয়েটি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। বাড়ির ছাগলগুলোকে নিয়ে রোজই মাঠে চড়াতে নিয়ে যেতেন ওই যুবতী। মাঝে, মাঝে মাঠে ঘাস কাটতেও যেতেন। মাঠে যুবতীকে একলা পেয়ে অভিযুক্ত জীবন ঘোষ গত চার মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। তার ফলেই ওই যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন। দিনদশেক আগে ওই যুবতীর শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করে তাঁর মায়ের সন্দেহ জাগে। তখন মেয়েটি তাঁর মাকে জানান জীবনই তাঁর সঙ্গে এমন কুকীর্তি করেছে। এমনকী, সোনামুখীতে ডাক্তারি পরীক্ষার নাম করে জীবন ভুলিয়ে ভালিয়ে তাঁকে নিয়ে গিয়ে বলেও ওষুধ খাইয়ে তাঁর গর্ভপাত করায় অভিযোগ।
নির্যাতিতার দাদার কথায়, “বোন ছোটবেলা থেকেই কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। সবসময় বাড়িতে থাকতে চাইত না। তাই আমরা ওকে বাড়ির ছাগলগুলো নিয়ে পাশেই মাঠে চড়াতে নিয়ে যেতে দিতাম। মাঝে মাঝে ঘাস কাটতেও মাঠে যেত বোন। আমার বোন মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সেই সুযোগে জীবন ওকে ধর্ষণ করে। তখন বিষয়টা আমরা কেউ জানতাম না। বোনও একথা ভয়ে জানায়নি। দিন দশেক আগে বোনের শারীরিক পরিবর্তন দেখে মা সন্দেহ করেন। তখন বোন জানায়, যে জীবন ওঁর উপরে শারীরিক অত্যাচার করেছে।” তাঁর আরও দাবি, “মা জীবনকে ঘটনা জানানোর পরে ও বোনকে গত ১০ জানুয়ারি সোনামুখীতে ডাক্তার দেখানোর নাম করে নিয়ে গিয়েছিল।
এরপর বোনকে কিছু ওষুধ খাইয়ে দেয়। তাতেই বোনের গর্ভপাত হয়ে যায়। কিন্তু লোকলজ্জার কারণে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছে আমাদের। বোনের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ওঁর চরম ক্ষতি করেছে জীবন। জীবনের কঠোর শাস্তি চাইছি।” বৃহস্পতিবার ধৃতকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, অভিযুক্তের পরিবারের তরফে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।