Top Newsসড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির খবর ফাঁস করতেই খুন সাংবাদিক

সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির খবর ফাঁস করতেই খুন সাংবাদিক

SBN: বিজেপি শাসিত ছত্তিশগড়ে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা দুর্নীতির খবর ফাঁস করতেই খুন হতে হল সাংবাদিককে। গত ১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন ছত্তিশগড় প্রশাসনকে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়া বিজাপুরের সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর। প্রায় দু’দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে অবশেষে গত শুক্রবার এলাকায় ছত্তনপাড়া সড়ক কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রকরের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হল মুকেশের দেহ। আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, সুরেশ ও মুকেশ সম্পর্কে তুতো ভাই। সিসিটিভি ফুটেজ, মুকেশের ফোনের শেষ লোকেশন দেখে সুরেশের ডেরার সন্ধান পায় পুলিশ। ইতিমধ্যেই খুন ও দেহ লোপাটের অভিযোগে অভিযুক্ত ঠিকাদারের ভাই রীতেশ ও তাদের আত্মীয় দীনেশ চন্দ্রকরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পলাতক সুরেশের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে। যদিও একটি সূত্রের দাবি, হায়দরাবাদে গ্রেপ্তার হয়েছে সুরেশ। বস্তার এলাকায় বেশ পরিচিত ছিলেন মুকেশ। শুধু তা-ই নয়, নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘বস্তার জংশন’-এর মাধ্যমে বস্তার জেলার নানা রকম খবর তুলে ধরতেন। চ্যানেলের গ্রাহকের সংখ্যাও ছিল দেড় লক্ষাধিক। তাই তাঁর হত্যার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাইও বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছেন প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারপার্সন বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই। রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি। মুকেশ চন্দ্রকর। অভিযোগ, বস্তার এলাকায় সরকারি পাওয়ার জন্য অর্থ টেন্ডার এবং লোকবল প্রয়োগ করতেও পিছপা হয় না সুরেশ। যে সব সাংবাদিক তার দুর্নীতি ফাঁসের চেষ্টা করেন তাঁদের নানাভাবে হেনস্তা এবং প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সুরেশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মুকেশ বস্তারের গাঙ্গালুর থেকে হিরোলি পর্যন্ত সড়ক প্রকল্পের পিছনে কুখ্যাত ঠিকাদার লবির কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ করেন। প্রথমে প্রকল্পটির জন্য ৫০ কোটির টেন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু সুরেশ সেই টেন্ডার নিয়ে ১৫০ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে বলে দাবি করে। মুকেশ কেলেঙ্কারির কথা ফাঁস করতেই ছত্তিশগড় সরকারের তরফে বস্তারের ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। নিহত সাংবাদিকের দাদা যুকেশ ভাই নিখোঁজ হওয়ায় থানায় ডায়েরি করতে গিয়ে সুরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন। সুরেশ মুকেশকে হুমকি দেয় বলে জানান তিনি। তুতো ভাই হওয়ায় রীতেশের সঙ্গে মুকেশের চিরকাল সম্পর্ক ভালোই ছিল বলে দাবি প্রতিবেশীদের। যে বাড়ি থেকে মুকেশের দেহ উদ্ধার হয়েছে সেই বাড়িতে আগেও রীতেশের সঙ্গে তাঁকে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছিল। খুনের দিন রীতেশই মিটমাটের জন্য মুকেশকে ওই বাড়িতে ডেকেছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। আগেও খবর প্রকাশ্যে আনার জন্য মুকেশকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। ২০২১ সালে মাওবাদী দমন অভিযানে বেরিয়েছিল সিআরপিএফ। সে সময় মাওবাদীদের হাতে অপহৃত হন সিআরপিএফ কমান্ডো রাকেশ্বর সিংহ মানহাস। ওই কমান্ডোর মুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন সাংবাদিক মুকেশ। রাজ্য পুলিশ তাঁকে সম্মানিত করে।