নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রয়াত হলেন রেলনগরী খড়গপুর শহরের রাজনীতিতে বর্ণময় চরিত্র সত্যদেও শর্মা। মৃত্যকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। সোমবার সকাল সাতটা নাগাদ খড়গপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খড়িদা মিলনমন্দির এলাকার নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে খড়গপুর শহরের রাজনৈতিক জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নানারকম অসুখে ভুগছিলেন।
তিনি খড়গপুর পুরসভায় চারবারের কাউন্সিলর ছিলেন। গত পুরসভা নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। কিন্তু অল্প ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হন। তিনি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও তাঁর যাবতীয় কাজকর্ম ছিল পূর্বতন ১১ নম্বর বর্তমানে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি শেষবারের মত পুর নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন ২০১০ সালে। এছাড়া তিনি কাউন্সিলর ছিলেন ১৯৯০, ১৯৯৫, ২০০৫ ও ২০১০ সালে। খড়গপুর শহরে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা তাঁর হাত ধরেই হয়।
তখন তাঁর সাথে ছিলেন বর্তমানে তৃণমূলের প্রবীণ নেতা তথা খড়গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল, শ্যামাদাস ঘোষ, প্রয়াত মহম্মদ আকবর প্রমুখ। পরে অবশ্য মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় তিনি তৃণমূল থেকে বেরিয়ে যান। পরে খড়গপুর বিকাশ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই সংগঠনের নামেই তিনি পুর নির্বাচনে লড়েছেন। তবে প্রথম কাউন্সিলর হয়েছিলেন নির্দল প্রার্থী হিসাবে ১৯৯০ সালে খড়গপুর পুরসভার পূর্বতন ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে।
পরবর্তীকালে ১৯৯৫ সালে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে তিনি এই ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন। ওই বছর খড়গপুর পুরসভায় বামেদের হারানোর ঘটনায় তাঁর একটি বিরাট অবদানের কথা এখনও স্বীকার করেন সকলে। পরে অবশ্য খড়গপুর শহরের কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তিনি দলত্যাগ করেন। শহরে প্রতিষ্ঠা করেন তৃণমূল। এদিকে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে খড়গপুরের পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ সহ প্রাক্তন পুরপ্রধানফ রবিশঙ্কর পান্ডে, আমরা বামপন্থী -খড়গপুরের সম্পাদক অনিল দাস ও বহু বর্তমান ও প্রাক্তন কাউন্সিলর।
শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হেমা চৌবে সহ তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুতে খড়গপুর শহরের রাজনৈতিক জগতে একটি যুগের অবসান হল বলে মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেতা তথা খড়গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পান্ডে।
সাংসদ দিলীপ ঘোষ বললেন ” তিনি খড়গপুরের রাজনৈতিক জগতে একটি বর্ণময় চরিত্র ছিলেন। একটা শূন্যতা তো হলই।” পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বললেন ” তিনি খড়গপুরের রাজনীতির জগতে একটি চরিত্র ছিলেন। তারসাথে তিনি সমাজসেবীও ছিলেন। তাঁকে প্রয়োজনে এলাকার মানুষ সবসময় পাশে পেয়েছেন। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।”