নিজস্ব সংবাদদাতা: ট্রাক্টরের রোটারে জড়িয়ে বাবার চোখের সামনে মৃত্যু হল একমাত্র ছেলের। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে বেলদা থানার বিম্বলটিটিয়া গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম প্রদীপ সাউ (১৪)। বাড়ি একই গ্রামে। মৃত নাবালক জাহালদা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। আর কয়েকটি দিন পরেই তার বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। এদিকে, পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তানের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন বাবা ও মা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নাবালকের বাবা সুশান্ত সাউ চাষের কাজের জন্য নতুন একটি ট্রাক্টর কিনেছেন। সেই নতুন ট্রাক্টরটি নিয়ে বাবার সঙ্গে ওই নাবালক জমিতে যায় হাল করতে। জমিতে হাল শুরুর আগে ওই নাবালক বাবার নিষেধ না শুনে ট্রাক্টরের চালকের পাশে গিয়ে বসে পড়ে। আর বাবা সুশান্ত সাউ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাল শুরু করার জন্য ট্রাক্টরটি একটু গড়াতেই প্রদীপ হঠাৎ পা হড়কে উপর থেকে পড়ে যায় নিচে। তখনই ট্রাক্টরের রোটারের ভিতরে ঢুকে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ওই নাবালকের দেহটি। বাবার চোখের সামনেই নিমেষে শেষ হয়ে যায় ছেলের প্রাণ। তিনি ট্রাক্টরের কাছে দৌড়ে পৌঁছনোর আগেই সব শেষ হয়ে যায়। এদিকে, ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব চালক ট্রাক্টর থেকে নেমে পালিয়ে যান। নাবালকের বাবার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় নাবালককে উদ্ধার করে দ্রুত বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে বেলদা থানার পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছয়। মৃত নাবালকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে, একমাত্র পুত্রসন্তানের এরকম মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ি করে সুশান্ত সাউ বলেন, “আমার নতুন কেনা ট্রাক্টরটি কাল হল। আগে ছিল না ভালো ছিল। এই নতুন ট্রাক্টর অভিশাপ হয়ে দাঁড়াল পরিবারের কাছে। আমার একমাত্র পুত্রসন্তান চলে গেল। এখন আমি কাকে নিয়ে থাকব।” জানা গিয়েছে, সুশান্তবাবুর একটি বিবাহিতা মেয়ে রয়েছে। ছেলেকে নিয়েই তাঁর ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ছিল। অসাবধানতাবশত একটি দুর্ঘটনা সবকিছু উলটপালট করে দিল বেলদা থানার বিম্বলটিটিয়া গ্রামের এই সাউ পরিবারকে।