SBN: রবিবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিট। প্রচণ্ড শব্দে মাটিতে মিশে গেল কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ‘অকেজো’ চিমনি। আগে ৬টি চিমনিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। এ দিন থেকে সংখ্যাটা কমে দাঁড়াল চারে। ডিনামাইটের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তা ভাঙা হল বিদ্যুৎ দপ্তরের নির্দেশে এই পদক্ষেপ করা হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় দফার তিনটি ও প্রথম দফার তৃতীয় চিমনির মুখে আধুনিক ইএসপি মেশিন বসিয়েছিল। কিন্তু পুরনো মডেলে তৈরি প্রথম দফার প্রথম এবং দ্বিতীয় চিমনির আধুনিকীকরণ করা যায়নি। সেই জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রক পর্ষদ ওই চিমনি দুটির ব্যবহার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। যেহেতু চিমনিগুলির কোনও কার্যকারিতা ছিল না, সেই কারণে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৯৮৪ সালে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এশিয়ার বৃহত্তম কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের তিনটি ইউনিটের উদ্বোধন করেছিলেন। ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ের চার, পাঁচ, ছয় এই তিনটি ইউনিট চালু হয়। প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পুড়িয়ে ইউনিট পিছু দৈনন্দিন ২১০ মেগাওয়াট করে অর্থাৎ মোট ১২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হত। কিন্তু অত্যন্ত নিম্নমানের কয়লা পুড়িয়ে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে প্রত্যহ প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন ছাই নির্গত হত এই কেন্দ্রটিতে। ফলস্বরূপ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে নির্গত ছাই দূষনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলায় কোলাঘাট, মেছেদা সহ পার্শ্ববর্তী পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার প্রায় ৫০০ বর্গ কিমি এলাকা ভয়াবহ দূষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ। তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রতিকার চেয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।
অবশেষে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কয়েক দফায় প্রায় ১ কোটি টাকা জরিমানার পাশাপাশি ৬ টি ইউনিটকেই আধুনিকীকরণের মাধ্যমে দুষনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় এমন নির্দেশের পর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় দফার তিনটি ও প্রথম দফার তৃতীয় চিমনির মুখে আধুনিক ইএসপি মেশিন বসালেও পুরানো মডেলের তৈরি ১ম দফার প্রথম ও দ্বিতীয় চিমনি দুটি আধুনিকীকরণ করতে ব্যর্থ হয়। সে কারণে পর্ষদ ওই তিন চিমনিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। তারপরই এদিন চিমনি দুটি ভেঙে ফেলা হল
প্রচণ্ড শব্দে মাটিতে মিশে গেল কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ‘অকেজো’ চিমনি! তারপর ?
